জলবায়ুর পরিবর্তন সমগ্র বিশ্বের জন্য খুবই বড় একটি সমস্যা। মানব জনগোষ্ঠীর শিল্পবিপ্লবের পর পরই মূলত পৃথিবীতে কার্বন নিঃস্বরণের হার অতিমাত্রায় বেড়ে যায়। যা কিনা পরবর্তীতে পরিবেশ এ প্রানীকূলের উপর ব্যাপক ভাবে প্রভাব ফেলে। আমাদের নিজেদের টিকে থাকার জন্য নিজেরা ক্রমাগত প্রাকৃতিক ভূমি দখল করে নিজেদের জমির পরিমাণ বাড়িয়ে চলেছি। আধিপত্য বিস্তারের ইতিহাস মানব সমাজের জন্য নতুন কিছু নয়। যুগের পর যুগ থেকে “সার্ভাভাইবেল ফর দ্য ফিটেস্ট” সংলাপটির বাস্তবায়ন মানুষ ঘটিয়ে চলছে। আর তার জন্য তারা বিলুপ্ত করেছে অসংখ্য প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রানীকূল।
১৭৫০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫৭১ প্রজাতির উদ্ভিদের বিলুপ্তি ঘটেছে। ১৯০০ সাল থেকে এ বর্তমান কাল অব্দি প্রতি ৩ বছরে অন্ততপক্ষে ৮ টিরও বেশি গাছের বিলুপ্তি ঘটেছে। যা কিনা প্রাকৃতিক ভাবে উদ্ভিদ বিলুপ্তির ৫০০ গুন। ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশনের শুরু থেকেই কার্বন নিঃসৃত হওয়া, কেমিক্যাল ও নন-বায়োডিগ্রেডেবল প্রোডাক্টের লাগামহীন ব্যাবহার পৃথিবীর সবুজ আরণ্যের করেছে ব্যাপক ক্ষতি সাধন। অতিরিক্ত কেমিক্যাল সার এর ব্যাবহার যেমন উদ্ভিদ ও চারার ক্ষতি করছে তেমনি বিষক্রিয়া ঘটাচ্ছে খাদ্যেও। এমন অবস্থায় আরো প্লাস্টিকের ব্যাবহারের ফলে তা করেছে মাটি, পানির বিস্তর বিপর্যয়।
গাছকে বলা হয় “কার্বনের ছাকনি”। কেননা পৃথিবীতে নিঃসৃত CO2, যার ৩০ শতাংশের বেশিই মানুষের দ্বারা তৈরী। তা উদ্ভিদ গ্রহণ করে এবং সূর্যালোকের উপস্থিতিতে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিজের জন্য খাদ্য তৈরী করে। যা কিনা গাছের জন্য উপকারী। কিন্তু অতিরিক্ত কার্বনডাই-অক্সাইড, ওজনলেয়ারের ক্ষতি সাধন করে। এতে সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি পৃথিবীকে উষ্ণ করে তোলে, ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। জলবায়ুর এ পরিবর্তনের কারণে খরা, জলচ্ছাস, বনে আগুন লাগার মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। যা কিনা মানবসভ্যতা এবং পরিবেশের জন্য জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।
তাই এ অবস্থা থেকে বাঁচতে চাইলে আমাদের একান্তই কর্তব্য হলো নিজেদের সংশোধন করা।
প্লাস্টিক, পলিথিন রিসাইকেল, জমিতে অতিরিক্ত কৃত্রিম সার ব্যাবহার কমিয়ে আনা, বৃক্ষ নিধন, বনাঞ্চল ধ্বংস না করা। প্রতিটি বৃক্ষ ও প্রাণীদের নিজস্ব বাস্তুতন্ত্র আছে। প্রাচীন কাল হতে আস্তে আস্তে মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে তাদের অনেকাংশই আশংকাজনক হারে লোপ পেয়েছে। অতএব, মানুষ হিসেবে আমাদের কর্তব্য যেন পৃথিবীটাকে বসবাস যোগ্য করে তুলতে আরো সচেতনতার সাথে পরিবেশ সংরক্ষণের নীতিগুলো মেনে চলি। আপনার, আমার একটি চারাগাছ রোপনই আগামীর জন্য নতুন একটি সুন্দর পৃথিবী তৈরীতে ভূমিকা রাখবে।